নিজস্ব প্রতিবেদক
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত অধিদপ্তর যেন দুর্নীতির আখড়া পিয়ন থেকে শুরু করে প্রকৌশলী উচ্চ পদস্থ অধিকাংশ কর্মকর্তারা যোগদানের পরেই জড়িয়ে পড়েন ঘুষ দুর্নীতি সহ নানা অনিয়মের ভেতর অবৈধ উপায়ে অর্থ আয় করে শূন্য থেকে হয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দিলেও তা অদৃশ্য কারোনে কার্যকর হয় না অভিযোগ আছে অবৈধ অর্থ দিয়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা থামিয়ে দেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি অবৈধ উপায়ে শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের একাধিক সংবাদ প্রকাশের পরও বহাল তবিয়তে আছেন।
ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দরিদ্র হাশেম উদ্দিনের ছেলে জয়নুল আবেদীন তিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন স্থাপত্য অধিদপ্তরে। সামান্য বেতন দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ার কথা কিন্তু তিনি জীবন যাপন করেন আলিশান ভাবে। নিজে যা বেতন পান তার থেকে বেশি বেতন দেন নিজের গাড়ির ড্রাইভারকে।
অথচ এই চাকরি করেই গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ, একাধিক গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ রয়েছে অনেক সম্পদ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদের তার সম্পদের তথ্যে দেখা যায়, ২৮ বছরের চাকরি করে সম্পদ করেছেন একাধিক প্লট, ফ্ল্যাট, পাঁচতলা বাড়িসহ নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ। চড়েন ৪৮ লাখ টাকা দামের টয়োটা প্রিমিও গাড়িতে। ওই গাড়ির চালককে মাসে বেতন দেন ২৫/৩০ হাজার টাকা। ঢাকায় নিজের নামে তিনটি ও স্ত্রীর নামে দুটিসহ মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পাশে রয়েছে তার পাঁচতলা বাড়ি। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার ডাকবাংলোর পাশে আছে কয়েকটি প্লট ও ফসলি জমি। স্ত্রী শাহানা পারভীনের নামে রয়েছে দুটি প্রাইভেটকার। একটি এলিয়ন ও আরেকটি নিউ মডেলের প্রিমিও।
গণপূর্তির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করে বলেন, নকশা অনুমোদন থেকে শুরু করে, টেন্ডার, কেনাকাটা সবকিছুতেই হস্তক্ষেপ করেন তিনি, অনেক সময় অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কাজ তিনি নিজে করে ফেলেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে একাধিক অভিযোগ হয়েছে তার বিরুদ্ধে কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি কখনো। রাজধানীর মোহাম্মদপুর আদাবরের সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি ক্রয় করেছেন প্লট ফ্লাট বাড়ি।
তার কয়েকজন সহকর্মী বলেন, অধিদপ্তরের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে জয়নুলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এবং তাদেরকে নিয়মিত প্রতিটি কাজের ভাগ দেন, এজন্যই নিয়মবহির্ভূত অনেক কাজ সে নিয়ন্ত্রণ করে। এই জন্য নামকরা বেশকিছু হাউজিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তার সখ্যতা রয়েছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক স্থাপত্য নকশা সে চুক্তির মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে দেয়।
জানা গেছে, স্থাপত্য অধিদপ্তরে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদানের পরই জয়নুলের ভাগ্য খুলে যায় অনিয়ম দুর্নীতি করে কামিয়েছেন শত কোটি টাকা।
দায়িত্ব পালন করছেন ৪৩/১৩/বি, শ্যামলী হাউজিং, রোড-৬, শেখেরটেক, আদাবর বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কমিটির সভাপতি হিসেবেও। কারণ আদাবরে তিনি একজন শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত।
নাম প্রকাশে অনেক দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ ই আগস্ট এর আগে কি হয়েছে সেটা বলতে পারবো না তবে এখন কোন দুর্নীতিবাজ অসাধু কর্মকর্তাকে কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সকল প্রতিবেদনগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি।
এ বিষয়ে জানার জন্য জয়নুল আবেদীনের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জয়নুল আবেদীনের অনিয়ম ও সম্পদের আরো তথ্য নিয়ে আসছে দ্বিতীয় পর্ব।